ভয় খুবই প্রাকৃতিক অনুভুতি। আমরা প্রত্যেকেই কোনো না কোনো বিষয়ে ভয় পাই।
আর যখনই ভয় পাই কাছের মানুষরা প্রায়শই বলে- "অযথা ভয় পাচ্ছো, সব ঠিক হয়ে যাবে"।
তবে আমিও জানি, আপনিও জানেন, এরকম ভয়ের ওষুধে তেমন ফল পাওয়া যায় না। এই মন ভোলানো কথা গুলো হয়তো কয়েক মিনিট বা কয়েক ঘণ্টার জন্য ভয় দূর করতে পারে, তার বেশি না।
কোনো ধরনের কল্পনা বা আশ্বাস এর মাধ্যমে আত্মপ্রত্যয় গড়ে ওঠে না, ভয়ও দূর হয় না।
হ্যাঁ, এ কথাও স্বীকার করতে হবে যে ভয় জয় করার আগেই তা আমাদের মনে গেথে যায়।
আর বেশিরভাগ ভয়ই মনের রগ হয়ে দারায়। ভয় থেকে মুক্তি পেতে হলে আপনাকে জানতে হবে তার আসল কারন অর্থাৎ ভয়ের মূলে যেতে হবে।
অনেকে আবার ভয়কে স্বীকার করতে চান না। তবে ভয় তো সত্যি আছে। ভয়ের কারণে মানুষ সুযোগ হারায়, ভয়ের কারণে নানা রোগ সৃষ্টি হয়, ভয়ের কারণে নানা সমস্যা দেখা দেয়,ভয়ের কারণে মানুষ নিজেকে প্রকাশ করে না, ভয়ের কারণে মানুষ আত্মহত্তাও করে।
মানুষ যা পেতে যায় তার মাঝখানে পাহারের মত এসে দাঁড়ায় এয় ভয়। নানা ধরনের, নানা আকারের ভয় মন কে গ্রাস করে নেয়। শরীরের মত মনকেও অচল করে দেয়।
এই ভয় থেকে মুক্তির প্রথম নিয়ম লিখে ফেলুন - নিজের ওপর বিশ্বাস গড়ে তুলতে হবে।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় নৌসেনাতে নাবিকদের সাতার জানা আবশ্যক করে দেওয়া হয়। যাতে করে নাবিকরা মাঝসামুদ্র থেকে অন্তত প্রাণে বাঁচবে, মরবে না। যারা সাঁতার জানত না তাদের সাঁতার ক্লাসে ভর্তি করা হল। Practice এর সময় তাঁদের ৬ ফুট উঁচু বোর্ড থেকে ৮ ফুট গভির জলে ঝাঁপ দিতে বলা হয়, আর বেশ কয়েকজন সাঁতার বিশেষজ্ঞ ব্যাপারটা দাড়িয়ে দেখছিলেন।
ভেবে দেখলে ব্যাপারটা সত্যি দুঃখজনক ছিল। নতুন নাবিকরা সবাই ভীত ছিল, অথচ তাঁদের মনের ভয়কে হারানোর জন্য দরকার ছিল একবার শুধু জলে ঝাঁপ দেওয়া।
বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছিল যুবকদের হঠাত ধাক্কা দিয়ে বোর্ড থেকে ফেলে দেওয়া হচ্ছে।
পরিণাম - ভয়কে জয় করা।
নৌসেনাদের অতি পরিচিত এয় ঘটনাটি একটি কথা প্রমাণ করে - অযথা বিলম্ব বা দেরি করা ভয় বারায়।
এখনি Diary তে নোট করে রাখুন - সক্রিয়তা , কর্মতৎপরতা ভয় দূর করে ।
ভয়কে জয় করার বেশ কিছু কর্মতৎপর পদ্ধতিঃ
১। নিজের চেহারা(Looks) নিয়ে লজ্জা অনুভব করছেন ➡
চেহারায় উন্নতি করুন, চুল কাটিয়ে আসুন, জুতো পালিশ করিয়ে আনুন, পরিস্কার ইস্ত্রি করা পোশাক পরুন, নিজেকে Smart ঝকঝকে করে তুলুন।
২। পরীক্ষায় ফেল করার ভয় ➡
দুশ্চিন্তা না করে পড়াশুনা করুন, সময়কে কাজে লাগান।৩। যা আপনার হাতের বাইরে তা নিয়ে ভয় ➡
অন্য কিছুতে মন দিন, সিনেমা দেখুন, ছেলেমেয়েদের সাথে খেলুন, নিজেকে ব্যস্ত রাখুন।
৪। অন্যরা কী ভাববে, কী বলবে তা নিয়ে ভয় ➡
নিজের কাজের ব্যাপারে সুনিশ্চিত হোন, আর মনে রাখবেন যে কোনো গুরুত্বপূর্ণ কাজে সমালোচনা শুনতে হয়।
৫। মানুষকে ভয় ➡
সঠিকভাবে যাচাই করুন, ভরসা রাখুন। সামনের জনও আপনারই মত একজন মানুষ।লেখাটি ভালো লাগলে আপনার কাছের মানুষটির সাথে Share করুন। আপনার দিনটি শুভ হোক।